Showing posts with label Bengali Poem. Show all posts
Showing posts with label Bengali Poem. Show all posts

ভালোবাসার উপোহার

বিকেলের বিষাদকে পেরিয়ে
সন্ধ্যার আচ্ছন্নতা এড়িয়ে
নিজের সাথেই যুদ্ধে শেষে
হার মানলাম, রাত্তিরে এসে

আর এগোনোর শক্তি নেই আমার
তবু নেই অনুমতি,- থামার
দু কাঁধে প্রত্যাশার বোঝা
আঁধারে আমার পথ খোঁজা

কে য্যানো ধারালো কিছু দিয়ে
স্বপ্নগুলো দিলো কূপিয়ে
দেখি দুস্বপ্ন নিরন্তর
অ্যাক রক্তাক্ত মরূপ্রান্তর ...

এক ফ্যাকাশে অনিশ্চয়তা
বাড়ায় দুঃস্বপ্নের ভয়াবহতা
নেভে আকাশের সব তারা
নিচে একা আমি আশাহারা

আমি-ই করেছিলাম ভুল
আমার স্বপ্নেরা দিলো মাশূল
পালিয়ে বেড়াই আজও শোকে
স্বপ্নের মৃতদেহ চোখে ...

পদে পদে বিপদ দাঁড়িয়ে
মৃত্যু দুইহাত বাড়িয়ে
নিয়ত হৃদয়ে আঘাত
করে আত্মাকে আত্মসাৎ

নেই উপায়, কিছুই ফিরে পাওয়ার
শেষ সাহস, নতুন কিছু চাওয়ার
নেই শক্তি, ভালোবাসার আর -
পেয়েছি একবারে-ই, অ্যাতো উপোহার।।

- সুমন বারিক


-------------- X -------------






ব্যর্থ নিবেদন

যাবো দেখে দূর থেকে
দুরত্ব বজায় রেখে –
তোমাকেই ভালোবেসে যাই।
কলেজে রিডিং রুমে
কখনও স্বপ্নে ঘুমে
তোমাকেই শুধু কাছে চাই।
যদি সে স্বপ্ন থেকে
(আর) না জাগি জীবিতোলোকে
নীরবেই বিদায় জানাই।
বিদায়ের শেষ রাতে
যে মালা পরাবে তাতে
তোমার-ই স্পর্শ য্যানো পাই।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

অন্য আমি

অস্থির মন, আচমকা স্থির, বলে আজ থাক
যা কিছু সে চেয়েছিলো, সব ভুলে যাক
অন্ধকারের কালো গহ্বরে খবর পাঠাক
আলোর, আশার …

তারপরে আমি হোয়ে গেছি পার
হারিয়ে, যা ছিলো হারাবার
পেরিয়েছি সেই সাগর আমার
বেদনা, হতাশার …

আর ফিরবোনা পুরোনো পথে
আপোশে ভরা বাঁধা গথে
(আজ) বেঁধেছি মন এই শপথে
হারিয়ে যাবোই …

‘স্মৃতি’ ভুলে থেকো তুমি আমার
লক্ষের মাঝে কোরো নিরাকার
ডাক শুনো না সে পুরনো কথার
“তোমায় পাবোই ” …

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

আকাশ ঝর্ণা

ব্যাথা বুকে বয়ে চলে তৃষিত জলধারা
ঘুণ ধরা আকাশে সে খুঁজেছিলো শুকতারা
পেল হৃদয় ভরা
মরুদ্যানেতে খরা
নীরবে নিশুতি রাতে অঝোরে অশ্রুধারা
নোনাধরা আশা নিয়ে ডেকে ডেকে হ্য় সাড়া …

দায়বদ্ধ আকাশ, কারো কর্তব্যপাশে
বৃষ্টিতে দুখ তার ঝর্ণায় এসে মেশে
আবেগে বাঁধানো -
স্মৃতি থাক সাজানো
ব্যাথিত আনন্দে দুঃখকে চেপে হাসে
স্থিতধী জানে সে, রাত পর-ই ভোর আসে …

তৃষিত ঝর্ণা তবু ব্যাথিত আকাশে
খুঁজে ফেরে জ্যোৎস্না, শোকাহত বিন্যাসে …
                         - সুমন বারিক


-------- x --------

ছন্দক্ষ্যাপা

আয়রে আমার ছন্দমুখর
অন্ধ পাঁঠা, গন্ধ শূকর   
রাতবিরেতের পাগলা হাওয়া  
পাগলা মদন ভুতে পাওয়া
আঁড়ি পাতা চাকর বাকর 
খাতা জুড়ে পোকামাকড়  
মজুর মুটে আয়না ছুটে    
মাথায় মুড়ি, খা না খুঁটে   
দেখলে আছে সবার ভাগে
দেখতে গেলে চক্ষু লাগে   
নাই যদি তোর দেহজোড়া
বাঘের মত ডোরা ডোরা   
তাই বলে ‘তুই মানুষ’ ভাবিস ?
হুতোম প্যাঁচাও হোতে পারিস   
হোতে পারিস ছুঁচো বেবুন
আলু পটল কুমড়ো বেগুন 
সূয্যি লুকায় মেঘের পাড়ে
তুই-ও পালা বাঁচবি নারে 
ছুটছে ছন্দ ছন্নছাড়া
পাচ্ছে যাকে করছে তাড়া
হায় হারালো নিয়ন্ত্রণ
হোচ্ছে মজা বিচক্ষণ
কাব্যরথে ছন্দ ঘোড়া
পাখির পেটে পালক পোড়া
‘হ’-এ হাঁপানি হাঁপালো
 বেঞ্চি হোতে ঝাঁপালো
 হাঁপানি-টা বে-আক্কেল
 বাঁধিয়ে দিলো সে এক খেল
 বেঞ্চি ছিলো ছাদের ধারে
 হাঁপানি গ্যালো ‘স্বর্গ’ পাড়ে
‘স্বর্গ’ – হাস্পাতালের নাম
“হয়েছে, হয়েছে, এবার থাম”
দ্যাখো গণ্ডার যাচ্ছে উড়ে
চাঁদ এনে দাও খামে মুড়ে
নামছে ‘তারা’ সুরে সুরে
ঘুম এলো ভাই দুচোখ জুড়ে।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

স্বপ্ন স্মৃতি

ও স্বপ্ন – জীবনের শুরুতে
দুচোখের ভুরুতে
খুশির ছোঁওয়া দিয়ে যাও … 
সকলের আড়ালে
                      চুপি চুপি দেওয়ালে                    
কত ছবি তুমি এঁকে দাও … 
                                   
ও শ্মৃতি – কৈশোর বয়সে
আজও আমি হরষে
তোমার কথাই ভেবে যাই …
দুঃখের কালেতে
দুচোখের জলেতে
তোমাকেই মনে পড়ে তাই …  

এক সুর বাজে
এ হৃদয়ের মাঝে
মনকে নিয়ে যায়
বেলাশেষের কোনো এক সাঁঝে …
 
আমি হারিয়ে যাই
নিঁখোজের খোঁজে
আমার ব্যাকুলতা শুধু
প্রকৃতি-ই বোঝে …

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

স্মৃতি সাগরে

শূণ্য এই সমুদ্রতীরে
আসি বারে বারে ফিরে
আপন মনে, লক্ষ্য ছাড়াই
বালিতে, জলেতে হেঁটে বেড়াই
দিনের শেষে পাখির গানে
স্মৃতিসকল মন কে টানে –
দূরে আকাশ, জলে মেশে, 
ঢেউয়ের তালে, মন, চলে ভেসে...

একে একে পর্দা সব সরিয়ে দূরে
ধীরে ধীরে ঢুকে যাই – অন্তঃপুরে
হয়ত বা স্বেছায় নিজের ভিতরে
ডুব দিয়ে ডুবে যাই হৃদয় গভীরে...
ভুলে যাওয়া কত শত অনুভূতি জাগে
ভেসে ভেসে যেতে যেতে, গায়ে এসে লাগে
বুঝতে পারিনা, কে আমি, কে স্মৃতি
দুইয়ের সাথেই যে, প্রবল পরিচিতি...

ধীরে ধীরে নিজেকেই, হারিয়ে ফেলি
স্মৃতিসাগরে মিশে, স্মৃতি হোয়ে খেলি... ।।  

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

ভক্তের পরীক্ষা

"ব্রহ্ম হতে কীট-পরমাণু, সর্বভূতে সেই প্রেমময়,
মন প্রাণ শরীর অর্পণ কর সখে, এ সবার পায় ।
বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ?
জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর ।"
                                      - স্বামী বিবেকানন্দ


ঘন মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে উঠল আকাশ
অন্ধকার হইল চারিদিক চারিপাশ
গর্জন সহকারে শুরু হ’ল বারিপাত
সায়মকালে উপস্থিত হ’ল যেন রাত
হেনকালে দিনের শেষে, সারাদিনের মলিন বেশে
রাখাল বালক বাড়ির পানে ছুটতে লাগল উর্দ্ধশ্বাসে
সারদিনের পরিশ্রমে হয়েছিলো সে ক্লান্ত
এমনই সময় অন্ধকারে হ’ল সে দিগভ্রান্ত
চারিদিকে প্রবল ভাবে পড়তে লাগল বাজ
রাখাল ভাবল নেহাৎ-ই তার মরণ আছে আজ
করতে লাগল মনে মনে সে ঈশ্বরকে স্মরণ
“হে প্রভু, বাঁচাও মোরে, দিয়ে দরশন”
চিন্তা মনে, সে কেমনে পৌছবে তার গৃহে...
এমন সময়, কোথা হতে কে, ডাক দিয়ে বলে, “ওহে,
যেওনা আমায় এইখানেতে একলা ফেলে রেখে ।”
“কে? কে?” বলে রাখাল বালক চেঁচিয়ে উঠল ডেকে।
“দেখিতে পাইনে চোখে, আমি অতি বৃদ্ধ, -
সাহায্য করো হে ভাই, হোয়ো না ক্রুদ্ধ ;
গৃহেতে পৌছে তুমি বাঁচাও এ প্রাণ,
ঈশ্বর করবেন তোমার কল্যাণ ...”
রাখাল বালক সবিনয়ে ধরল তার হাত
ক্রমে ক্রমে পেল খঁজে গৃহে যাওয়ার পথ।
বৃদ্ধকে সাথে নিয়ে চলতে লাগল সে...
হঠাৎ-ই পাশ হতে কে উঠল হেসে ,-
চেয়ে দেখে বৃদ্ধ নাই, নাই পাশে কেহ,
অবশ হোয়ে আসে, ভয়েতে তার দেহ,
দৈববাণী শোনা গেল, “ওহে স্নেহময়! 
সম্মুখে তাকাও তুমি, নাই কোনো ভয়
তোমার কাজেতে আমি হয়েছি তুষ্ট
তোমার আর থাকবেনা কোনো কষ্ট ।”
সামনে তাকিয়ে রাখাল হ’ল বিস্মিত
দূর হ’ল মনে তার দুঃখ ছিল যত
সম্মুখে দেখিল সে দেবতা মহান
নররূপে করেন যিনি জগৎ কল্যাণ,
“খুশি মনে গৃহে যাও, নাই কোনো ভয়
তোমার জীবন হোক আনন্দময়
এভাবেই কোরি আমি জগৎ এ বিরাজ
পেতে হোলে মোর কৃপা, কোরো ভালো কাজ
জীবের সেবাতে হও নিবেদিত প্রাণ
মনে রেখো জীবেতেই আছেন ভগবান ।।”

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

ভ্রাতৃ বন্ধন

মাতৃদেশ ভারতবর্ষ করল নিজের জীবন দান
জন্ম দিল দুইটি দেশ – ভারত এবং পাকিস্তান,
একই মাতা ভারতবর্ষে জন্ম হয়েছে তাই
ভারত এবং পাকিস্তান – হোক তারা ভাই ভাই।

ভারতমাতা দিয়েছিলেন চিরন্তন শিক্ষা
সত্য শান্তি দয়া, প্রেম ও তিতিক্ষা...
যদি, নিজের মায়ের শিক্ষাটাকে নিজেই ভুলে বসি
বলতে পারো আমরা তবে কেমন ভারতবাসি ?!

কার সনে তোর যুদ্ধ এতো
কার সাথে শত্রুতা
চক্ষু মেলে দেখরে সেতো
তোর-ই আপন ভ্রাতা...

ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধে যদি
ঘরকে বানাস রক্তনদী ,–
নিজের সঙ্গে নিজেই তুই করবি যদি ছল –
পরকে দিয়ে দোষ তুই কিইবা পাবি ফল ?!

ভাই যদি হয় বিপথগামী,
আলোর পথটি দেখিয়ে দে
ভাই যদি সে মারতে আসে
বুকের মধ্যে জড়িয়ে নে।

ভারতবাসী পাকিস্তানী হৃদয়ে একই আত্মা
মিলেমিশে থাকলে তবেই থাকবে নিরাপত্তা
যুদ্ধ মানেই দেশে দেশে ঘোর অমঙ্গল
যুদ্ধ মানেই ভারতবর্ষ মাতার চোখে জল।।


                         - সুমন বারিক


-------- x --------

স্বাধীনতা দিবস

আজকে আমার ইচ্ছে করে
সকল বাধন ছিন্ন করে
মেলতে পাখা চলতে উড়ে
মেঘের পাড়ে বহুদূরে
যেথায় স্বর্গে বিপ্লবীরা
আনন্দে আজ আত্মহারা
শান্ত নয়নে তাকিয়ে থাকে
প্রাণাধিক ভালোবেসেছিল যাকে
সেই স্নীগ্ধ ভারতবর্ষ ’পরে
স্বর্গ হতে আজকে কুসুম ঝরে
মহান যত শক্তি বিশ্বে – সবই ভালবাসার
ইহা শুধুই মানুষ দেখে, নাহি দেখে কিছু আর
মানুষ পাবে অমর জীবন, ঘুচে যাবে সব হার
যুগ যুগ ধরে ইহাই বার্তা পবিত্র আত্মার
এই মন্ত্রেই দূরীভূত করে সব যশ-অপযশ
মিলনের গানে মুখরিত হোক স্বাধীনতা দিবস।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

কর্মযজ্ঞ

"কর্ম-ই উপাসনা" - স্বামী বিবেকানন্দ

দৃঢ় মুষ্ঠিতে ইচ্ছাসংবরণ
ভোগবাসনা করো অপহরণ
প্রতিহিংসাপরায়ণ রণ –
ক্ষেত্রে হোক তার মরণ

সুখ-ই জীবনের উদ্দেশ্য নয়
জীবন দুঃখের-ও শিষ্য নয়
ঘুঁচে যাক যত আলস্যময়
জীবনের চেনা পরিচয়

শুরু হোয়ে যাক কর্মযজ্ঞ
হোক তা-ই ব্যাধি দুরারোগ্য
কুনাশা এই নেশাতেই ভোগ্য
প্রকৃত আরোগ্য

সক্রিয় এ বিদ্রোহ ভিষণ
প্রয়োজনে হোক সব নির্বাসন
ত্যাগ কোরে রাজসিংহাসন
পড়ে নেব গৈরিক বসন

ভেঙ্গে শৃঙ্খল শক্তির জাগরণ
হোক শুভ চেতনার বিষ্ফোরণ
কর্ম বিনা জীবন ধারণ
অকারণ মন্ত্র উচ্চারণ

হোক বিনা মেঘে বজ্রপাত
হোয়ে যাই ডাকাবুকো ডাকাত
যত কঠিণ হোক কর্মজাত
কোরে নেবো আত্মসাৎ

যতদিন কাজ
ততদিন-ই থাক প্রাণ
তাই বলি আজ
কুঠারেতে দাও শান
পিছে পড়ে থাক পুরাতন যত
জীবন আলস্য-বিক্ষত।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

বাস্তব

“ ক্ষুধার্ত মানুষকে ধর্মের কথা শোনানোর অর্থ মানবাত্মার অবমাননা করা”
- স্বামী বিবেকানন্দ

স্বর্গে নয় পৃথিবীতে, কোরি আমি বাস্তবে বাস
চাইনা আমি নাচতে তাই, নিয়ে মাথায় ইতিহাস
“ভারতে ছিল সুবর্ণযুগ” – কী হবে কোরে গর্ব ?
আজকে মানুষ নরকে বাঁচছে, ব্যর্থ হচ্ছে সর্ব ...
স্বপ্ন দেখবো কি কোরে আমি পুরাতন কে ধরে ?-
আমি যে দেখেছি স্বচক্ষে ভারতের ঘরে ঘরে –
রোজ কত শত মানুষ মরে
একমুঠো অন্নের তরে ...

ভাবছে তারা ‘পরের বেলার খাবার কোথায় পাই ’ ,
ধর্মকথা এখন কি আর ঢুকবে মাথায় ভাই ?
ওসব বড় জ্ঞানের কথা – এখন সময় নাই
পারলে এসো অন্ন দিয়ে একটা প্রাণ বাঁচাই ...

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

আত্মজয়

উৎসাহ, মম উৎসাহ তুমি -
দুচোখে এমন-ই খেলে বেড়াও ,
তোমার স্পর্শে আসুক যারা -
প্রাণচঞ্চল হোক তারাও ।

আবেগ, আমার আবেগ সকল ,
ছোঁয়াও কন্ঠে পরশমণি ;
শোনে যে-ই কান, তব আহ্বান -
হোক সেই প্রাণে প্রতিধ্বনি ।

শক্তি, অসীম শক্তি আমার ,
শিরায় শিরায় প্রবাহিত হও -
দুর্বল কেন আপনারে ভাবি ,
সেই ভাবনারে ভুলিয়ে দাও ।

আলো, শান্ত আলো আমার -
শরীর জুড়ে রাজ করো ,
পরম আত্মার দৈবী প্রভাব -
মম আত্মাতে কাজ করো ।

লক্ষ্য হোক নিশ্চঞ্চল ,
চোখের সামনে চির উজ্জ্বল ,
লক্ষ কোটি ঝঞ্জা মাঝেও -
আদর্শ থাক অটল ।

নাই জোর যার আপনার রাজে -
বিশ্ববিজয় তার কি সাজে ?
প্রকৃতিকে যিনি করেছেন জয় -
তিনিই অকুতোভয়
তাই বিশ্বজয়ের সুচনালগ্নে -
   লক্ষ্য আত্মজয়।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------

আত্মবিশ্বাস

       “সবার আগে চাই আত্মপরিচয়ে গর্বিত হওয়ার শক্তি... বিশ্বাস বিশ্বাস বিশ্বাস – নিজের ওপর বিশ্বাস – ঈশ্বরে বিশ্বাস – ইহাই উন্নতি লাভের একমাত্র উপায়। যদি তোমার পুরাণের তেত্রিশ কোটি দেবতার ওপর এবং বৈদিশিকরা মধ্যে মধ্যে যেসকল দেবতার আমদানী করিয়াছে – তাহার সবগুলিতেই বিশ্বাস থাকে, অথচ যদি তোমার আত্মবিশ্বাস না থাকে, তবে তোমার কখনই মুক্তি হইবে না...

পৃথিবীর ইতিহাস কয়েকজন আত্মবিশ্বাসী মানুষেরই ইতিহাস... সেই বিস্বাস-ই ভিতরের দেবত্ব কে জাগ্রত করে... তুমি সবকিছু করিতে পারো... অনন্ত শক্তিকে বিকশিত করতে যথেষ্ট যত্নবান হও না বলিয়াই বিফল হও... যখন কোনো ব্যাক্তি বা জাতি আত্মবিশ্বাস হারায়, তখন-ই তাহার বিনাশ হয়।”
- স্বামী বিবেকানন্দ




আত্মবিশ্বাস

নিজের কার্য মন দিয়ে করো,
নিজ পরিচয় নিজেই গড়ো ;
তোমার কার্যে তুমি অপেক্ষ -
নাহি কেহ আর অধিক দক্ষ ;
যদি হও মাঝি – তুমি ধরো হাল ,
কি হবে তোমার ধরে তরোয়াল ?
চাই আত্মপরিচয়ে গর্বিত হওয়ার শক্তি ,
ঈশ্বরে পরে, আগে আনো নিজের প্রতি ভক্তি ;
নিজকার্যে গর্বিত হও, ছাড়িয়া লজা ভয়
সসম্মানে মাথা তোলো ভাই, কোনো কাজ ছোটো নয় ।।



                         - সুমন বারিক


-------- x --------

শিকড়ই সহায়


জাঁকজমকহীন পরিবেশে
আড়ম্বরহীন প্রাচীন দেশে
শান্ত আলোর পূণ্যভূমি
ক্লান্ত পথিকের লক্ষ্য তুমি
দিগ্ভ্রান্ত আত্মবিস্মৃত
উন্মাদনায় বিচলিত
শ্রান্ত যারা আসুক হেথা
মহিম স্পর্শে ভুলুক ব্যাথা
অজেয় আত্মার থাকে না ক্লান্তি
শান্তি শান্তি শান্তি শান্তি
পরম আনন্দে লভিয়া সমাধি
গভীর অন্তরে খোঁজে সে আদি
মুক্ত মন সত্যকে পায়
লব্ধ সত্য,- “শিকড়-ই সহায়”।।

- সুমন বারিক

মুক্তিবাসনা

দাও ঘুঁচিয়ে অহংকারের বাঁধন
   মুক্ত করো লক্ষ মানব মাঝে
শুনতে পেলাম বন্দি মনের কাঁদন
   দিনে রাতে, বিশ্রামে ও কাজে
  ******   
   শুনতে পেলাম দারুণ হাহাকার
   ফাঁকটুকু নেই বাতাস বইবার
   বন্দি আত্মা দেহের কারাগারে
   পাচ্ছে ক্ষয় শত কষ্টের ভারে
    দিনে দিনে ক্রমে প্রদীপ যাচ্ছে নিভে
     সলতে শুকায়,- যন্ত্রণা ও ক্ষোভে ...

   এনেছিলেম যে জীবন সঙ্গে করে
   শত সোনালি স্বপ্ন দুচোখে ভরে
   আজ সে জীবনে দুঃখ বসে হাসে
   সেই দুইচোখ - দুঃস্বপ্নের গ্রাসে
    অস্থির মনে করি শুধু ভুল ভ্রান্তি
      দাও এইবারে, দাও অনন্ত শান্তি ...
  ******
দাও মুছিয়ে ক্ষুদ্র দেহের বাঁধন
    ব্যাক্ত করো লক্ষ তারার মাঝে
সমাধিতে বসে নির্বিকল্প সাধন
    মহাশূন্যে, যেথায় সৃষ্টি সাজে ।।

                         - সুমন বারিক


-------- x --------




মাছি

সকল পৃথিবী (ও মঙ্গল) বাসীকে শুভ নববর্ষে আমার আন্তরিক উপহার - "মাছি" (সুরঃ চন্দ্রবিন্দুর "একটি মুরগী, দুটি পদ" এর মত)

দুটো মাছি বসলে নাকে
ছাড়বে কাকে, মারবে কাকে ?
যদি দুই-ই উড়ে যায় -
কষ্টে বুক পুড়ে যায় ;
 
শীতকালে জোরে,
নাক কাঁদছে অঝোরে,
শীতকালে ভোরে -
নাক কাঁদছে অঝোরে,
এলো মাছি, গেলো মাছি,
শূণ্য নাকে বসে আছি ...
 
একটা মাছি ঠ্যাং নাই,
চলো ভাজা ব্যাঙ খাই;
একটা মাছি ভন্ ভন্ -
শীতে নাক কন্ কন্ ;
 
শীতকালে যদি,
নাক হয় নদী ;
আহা, শীতকালে যদি,
নাক ভেসে নদী -
নৌকা নামা, আর কী চাস ?
চল্ রে ভেসে কলম্বাস ...
 
মারতে গিয়ে চেপ্টে ,
মাছি নাকে লেপ্টে ,
নাক হবে নাকাছি -
স্ত্রী মাছেরে কয় মাছি ...
 
মা মাটি মাছি -
সবে মিলে হাঁচি ,
মা মাটি মাছি -
একটা ফ্যামিলি-হাঁচি ,
চৌদ্দ গেলো, পনেরো এলো -
মাছি মাথা চেটে খেলো ...

 - সুমন বারিক
 



                                            
                                                              -------------- X ------------






যম কে জবাব

২০১২ সালে পৃথিবী ধ্বংস হবে কিনা, বা ধ্বংস যদি হয়-ও তাহলে তার ঠিক আগেরদিন এবং আগের মুহূর্তগুলো আমরা কি করব তা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনার অন্ত ছিলো না। ঠিক সেইসময়-ই এই কবিতা টা লেখা - যে ধংস এলে আমি ঠিক কী করব... :) 


ধ্বংস যবে আসবে তবে
এই বলে মোর 'জবাব' হবে...
মরতে যে চাস, মরগে যা
গামছা নিয়ে স্বর্গে যা
বল গে গিয়ে খুদার কাছে
আসতে আমার দেরি আছে...

পেরিয়ে দিন, পেরিয়ে রাত
হোলাম বড়, “ক্যায়া বাত, ক্যায়া বাত,”
তা কি শুধু-ই মরব বলে ?
ভাবলে পরেই রক্ত জ্বলে...

নেতৃত্বে আমার আজি
জাগছে পাজি, জাগছে মাঝি
জাগছে ধরা, জাগছে মরা
বিদ্রোহ এক পাগল করা...
দিনে দিনে ডুবে ঋণে
দিনে যারা শোয় কফিনে
বিদ্রোহে আজ সামিল তারাও
"মৃত্যু তাড়াও, মৃত্যু তাড়াও
জাপটে জরা ধরবো না
মরছি না, মরব না..."

কফিন ছেড়ে আসছে তেড়ে
দলে দলে মরার দল -
সবাই মিলে হারে রে রে,
পালাবি কোথায় এবার বল...

যমের সাথে জমিয়ে নেবো -
পাঙ্গা সম্মুখ সমরে -
চিমটি দিয়ে কমিয়ে দেবো,
 চর্বি যত কোমরে... 

যুদ্ধে জিতে খুব হিড়িকে -
যমের জামায় দেবো লিখে -
"মারছো মানুষ পটাশ পটাশ,
গন্ধ তুমি...  - গন্ধ খট্টাশ
*... "


-সুমন বারিক


--------- x ---------
 
*খট্টাশ বা polecat হলো এমন এক ধরনের জন্তু যারা দেহ নিঃসৃত তীব্র দুঃর্গন্ধের মাধ্যামে আত্মরক্ষা করে। আর সে গন্ধের জোর এতটাই যে বাঘ সিংহ ও খট্টাশকে ঘাঁটাতে সাহস করে না...






সৃষ্টির গড়া সৃষ্টি


একলা ঘরের একঘেয়েমি
ভীড়েও খুবই বিষণ্ন
গড়িয়ে চলার গোঁড়ামী
ছেড়ে, ভাবি করি কিছু অন্য...

মাথায়ভরা মাথাভার করা
ছন্নছাড়া চিন্তা
ঐক্যহীন লক্ষ্যহারা -
অস্থির সারাদিনটা ...

অন্য কোথাও, অন্য কিছু-
সংজ্ঞহীন চাহিদা...
দিনরাত করে তাড়া, পিছু পিছু
(আমি)নিজেই নিজের ধাঁধা...

উদাসীনতায় উড়ে গিয়ে দূরে
পাখি হয়ে গাছে বোসে
সূর্যাস্তের বিদায়ী সুরে
শৃংখল্ পড়ে খোসে...

সেই 'অন্য' কে করি অনুভব
এক আধ্যাত্মিক স্বাদ্
আবিষ্ট আমি নিথর্ নীরব
পার্থিব সব বাদ্ ...

আসল নকল এক হোয়ে যায়
মায়াময় দুনিয়ায় ...
চেনা স্রোত অচেনার দুনিয়ার
স্বতন্ত্রতা হারায় ...

মোহাছন্ন, - এখন হলাম ?
অথবা আগেই ছিলাম
অস্তিত্ব – পরিচয় – নাম
শূণ্যে ভাসিয়ে দিলাম ...

(লাগে) স্বপ্ন সত্যি, সত্যের চেয়ে
(এ) অসত্যেই আমি খুশি
আত্মার আলো আকাশে ছেয়ে
মুক্তির মুখোমুখি ...

বুঝিনা কি চাই – কোথায়, কখন -
ইচ্ছেতে নাই - নিয়ন্ত্রণ ...
কুল-কিনারাও খুজতে যাইনা –
বন্ধন ও সীমা চাইনা ...

চাইলাম নীল, হোয়ে গেলো তবু
গোলাপী রঙের বৃষ্টি
কেউ বা কইলো, "বাহ্ কবিবাবু -
করলেন নব সৃষ্টি "...

সাময়িকভাবে সব শোক ভুলে -
হই, আরোই, শান্তিহীন-ই ;
সংশয়স্রোত ভীড় করে কূলে
"আমি কি আমায় চিনি?"

সুখ্ হতে ওঠে দুঃখের ঢেউ -
দুঃখ ভাঙে সুখে ,
কেউ সুস্থায়ী, অস্থায়ী কেউ -
কে রাখে কাকে রুখে ...

যখন দুঃখ থাকে দূরে,
আমি আনন্দ ভীড়ে ,
তবু, তোলপাড় মন জুড়ে ;
যত দূরে, তত গভীরে ...

সুখের দুখের ভিন্ন বৃষ্টি ,
ঝাপ্সায় 'এক' হোয়ে যায় ...
রচে, সৃষ্টির গড়া সৃষ্টি
স্রষ্টার প্রচেষ্টায় ।।

-সুমন বারিক


-------- x ---------




Please Note:
  1. For spellings, emphasis has been given on pronunciation. So some spellings might look odd.